শনিবার, ৪ জুন, ২০১১

নারী-খৎনা : একটি বর্বরোচিত ধর্মীয় প্রথা


মুসলিম দুনিয়ার বহু দেশেই নারী খৎনা নামের এক বীভৎস, বর্বরোচিত ধর্মীয় প্রথা প্রচলিত রয়েছে । এই প্রথা মনুষ্যসমাজের কলঙ্ক বই কিছুই নয় । এই প্রথা পুরুষকে মানুষ থেকে শয়তানে পরিণত করেছে । আর নারীকে পরিণত করেছে পশুতর জীবে ।


এই প্রথা আজও প্রচলিত আছে ঘানা, গিনি, সোমালিয়া, কেনিয়া, তাঞ্জানিয়া, নাইজেরিয়া, মিশর, সুদান সহ উপসাগরীয় বিভিন্ন দেশে । এই সব দেশে নারীদের যৌন কামনাকে অবদমিত করে যৌন-আবেগহীন যৌন-যন্ত্র করে রাখতে পুরুষশাশিত সমাজ বালিকাদের ভগাঙ্কুর ( clitorich) কেটে ফেলে । নারীর যৌন-আবেগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় যোনির প্রবেশ মুখে পাপড়ির মত বিকশিত ভগাঙ্কুর । নারীদের খৎনা করা হয় ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে অর্থাৎ সাধারণত সাত-আট বছর বয়সে । খৎনা যারা করে তাদের বলা হয় হাজামী । দু'জন নারী শক্ত করে টেনে ধরে বালিকার দুই উরু । দু'জন নারী চেপে ধরে বালিকার দুই হাত । হাজামী ছুরি দিয়ে কেটে ফেলে ভগাঙ্কুর । এই সময় উপস্থিত নারীরা সুর করে গাইতে থাকেন, ''আল্লাহ মহান, মুহম্মাদ তার নবী; আল্লাহ আমাদের দূরে রাখুক সমস্ত পাপ থেকে ।"

পুরুষশাসিত সমাজ ওই সব অঞ্চলের মস্তিষ্ক স্নায়ুকোষের রন্ধ্রে রন্ধ্রেই বিশ্বাসের বীজ রোপন করেছে, কাম নারীদের পাপ, পুরুষদের পূণ্য । খৎনার পর সেলাই করে দেওয়া হয় ঋতুস্রাবের জন্য সামান্য ফাঁক রেখে যোনিমুখ । খোলা থাকে মূত্রমুখ । খৎনার পর চল্লিশ দিন পর্যন্ত বালিকার দুই উরুকে একত্রিত করে বেঁধে রাখা হয়, যাতে যোনিমুখ ভাল মত জুরে যেতে পারে । বিয়ের পর সেলাই কেটে যোনিমুখ ফাঁক করা হয়, স্বামীর কামকে তৃপ্ত করার জন্য । আবারো বলি, স্বামীর কামকে তৃপ্ত করার জন্যই; কারণ নারীর কাম তো ওরা পাপ বলে চিহ্নিত করে নারীকে করতে চেয়েছে কাম গন্ধহীন যৌন-যন্ত্র । সন্তান প্রসবের সময় সেলাই আরো কাটা হয় । প্রসব শেষেই আবার সেলাই । তালাক পেলে বা বিধবা হলে আবার নতুন করে আবার নতুন করে সেলাই পড়ে ঋতুস্রাবের জন্য সামান্য ফাঁক রেখে । আবার বিয়ে, আবার কেটে ফাঁক করা হয় যোনি । জন্তুর চেয়েও অবহেলা ও লাঞ্ছনা মানুষকে যে বিধান দেয়, সে বিধান কখনই মানুষের বিধান হতে পারে না । এ তো শুধু নারীর অপমান নয়, এ মনুষ্যত্বের অবমাননা ।